জুলাই থেকেই প্রণোদনা পেতে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা

সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি পেনশনভোগীরা ও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ৫ শতাংশ আর্থিক প্রণোদনা পেতে যাচ্ছেন। এই দুই শ্রেণির ব্যক্তিরা জুলাই মাস থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রণোদনার অর্থ দেওয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ করা হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় মাধ্যমে জানা গেছে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ তৈরির কাজ চলছে। এই প্রণোদনার ভেতরে অবসরভোগী ও শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা সুপারিশ করতে যাচ্ছি। এখন আর্থিক বিষয়সমূহ নিয়ে আমরা আলোচলনা করেছি। এ মাসের শেষে দিকে একটি সার-সংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উচ্চ স্তরে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, প্রণোদনার বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন এ মাসের শেষে বা আগামী মাসের শুরুতে জারি করা হবে। তবে প্রজ্ঞাপন যখনই জারি করা হোক না কেন, প্রণোদনার ৫ শতাংশ অর্থ সরকারি চাকরিজীবী, অবসরভোগী ও শিক্ষকরা জুলাই মাসের বেতনের সঙ্গেই পাবেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বক্তব্য দেওয়ার সময় সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ নতুন করে প্রণোদনা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মচারী যারা আছেন, তাদের বিশেষ বেতন হিসেবে মূল বেতনের ৫ শতাংশ আপৎকালীন সময়ে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি। আশা করি অর্থমন্ত্রী বিষয়টি গ্রহণ করবেন। আমরা শতকরা ৫% মূল সেলারি বিশেষ প্রকল্প হিসেবে তাদের মাঝে প্রদান করবো।

সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি, শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করায় ৫ শতাংশ প্রণোদনায় দেওয়ায় সরকারের বার্ষিক অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এটা চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট থেকে দেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। আরো আছে কয়েক হাজার পেনশনভোগী সরকারের সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। অন্যদিকে, দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ৩০ হাজার। এগুলোয় শিক্ষক-কর্মচারী আছেন পাঁচ লাখের বেশি। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) আওতায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী আছেন ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭১৫ জন। মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের আওতায় এমপিওভুক্ত মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারী আছেন ১ লাখ ৬৫ হাজারের মতো। আর কারিগরি শিক্ষায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী আছেন আনুমানিক ২০ হাজারেরও বেশি। সরকারি চাকরিজীবীদের মতো তারাও বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট, ঈদ বোনাস ও বৈশাখী বোনাস পেয়ে থাকে।

অবসরভোগীরা পেনশনের পাশাপাশি, দুই ঈদে ভাতা, বৈশাখী ভাতা, চিকিৎসা ভাতা পেয়ে আসছেন। এর আগে ২০১৮ সালে ৮ অক্টোবর শতভাগ পেনশন সমপর্ণকারীদের পেনশন ১৫ বছরে পুনঃস্থাপনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, যারা তাদের শতভাগ পেনশন সরকারের কাছে সমর্পণ (বিক্রি) করেছেন তাদের অবসরকালীন মেয়াদ ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আবার পেনশনের আওতায় ফিরে আসবেন। জানা গেছে, এদের সংখ্যা বর্তমানে ১০ হাজারের নিচে রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের। ২০১৫ সালে মূল্যস্ফীতির হার গড়ে ৫ শতাংশ ছিল বলেই ইনক্রিমেন্ট একই হারে বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছিল।

গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে করা হয় ৭৩ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা। বাজেট সংক্ষিপ্তসার ২০২৩-২০২৪ অনুসারে, পরবর্তী অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মচারীবৃন্দের বেতন-বোনাস বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮১ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা।

latest news: বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এলন মাস্ককেও ছাড়িয়ে গেলেন মুকেশ আম্বানি

Leave a Comment