হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়লে কি হয়? | WBC বাড়লে কি হয় | হোয়াইট ব্লাড সেল বা WBC আমাদের শরীরের সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কিন্তু, যখন WBC বাড়তে থাকে, তখন তা আমাদের শরীরের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
এই আর্টিকেলে, আমরা হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার কারণ, লক্ষণ, এবং প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়লে কি হয় | WBC বাড়লে কি হয়
হোয়াইট ব্লাড সেল বা WBC আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এরা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ, জীবাণু, এবং ভাইরাস থেকে রক্ষা করে।
সাধারণত, প্রতি ঘন মিলিমিটার রক্তে 4,500 থেকে 11,000 হোয়াইট ব্লাড সেল থাকে। যখন এই সংখ্যা বেড়ে 11,000 এর বেশি হয়, তখন তাকে হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়া বা WBC বাড়া বলা হয়।
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার কারণ
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার অনেক কারণ আছে।
এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো:
- সంక্রমণ: শরীরে কোনো সংক্রমণ হলে, হোয়াইট ব্লাড সেলের সংখ্যা বাড়তে পারে। এছাড়াও, যদি কারো শরীরে দীর্ঘদিন ধরে সংক্রমণ থাকে, তাহলেও WBC বাড়তে পারে।
- অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের বিভিন্ন খাবার, ওষুধ, বা ধুলো-বালির প্রতি অ্যালার্জি থাকে। এই অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায়ও WBC বাড়তে পারে।
- অন্য রোগ: কিছু অন্য রোগ, যেমন লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, এবং মাল্টিপল মাইলোমা, WBC বাড়ার কারণ হতে পারে।
- ওষুধ: কিছু ওষুধ, যেমন কোर्टিকোস্টেরয়েড, WBC বাড়ার কারণ হতে পারে।
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার লক্ষণ
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার লক্ষণগুলো নির্ভর করে এর কারণের উপর।
কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:
- জ্বর
- ক্লান্তি
- শরীর ব্যথা
- মাথাব্যথা
- রাতে ঘামতে থাকা
- ওজন কমে যাওয়া
- গলায় ব্যথা
- মুখে ঘা
- শরীরে র্যাশ বা ফুসকুড়ি হওয়া
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার প্রতিকার
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার প্রতিকার নির্ভর করে এর কারণের উপর।
যদি সংক্রমণের কারণে WBC বাড়ে, তাহলে চিকিৎসক সংক্রমণের চিকিৎসা করবেন। যদি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায় WBC বাড়ে, তাহলে চিকিৎসক অ্যালার্জি প্রতিরোধ করার ওষুধ দেবেন। যদি অন্য কোনো
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার প্রতিকার
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার প্রতিকার নির্ভর করে এর কারণের উপর। যদি সংক্রমণের কারণে WBC বাড়ে, তাহলে চিকিৎসক সংক্রমণের চিকিৎসা করবেন।
যদি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায় WBC বাড়ে, তাহলে চিকিৎসক অ্যালার্জি প্রতিরোধ করার ওষুধ দেবেন। যদি অন্য কোনো রোগের কারণে WBC বাড়ে, তাহলে সেই রোগের চিকিৎসা করা হবে।
সংক্রমণের কারণে WBC বাড়লে:
- অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল, বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ দিয়ে সংক্রমণের চিকিৎসা করা হবে।
- যদি সংক্রমণ দীর্ঘদিন ধরে থাকে, তাহলে চিকিৎসক অন্যান্য চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন, যেমন স্টেরয়েড বা ইমিউনোসপ্রেসার ওষুধ।
অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায় WBC বাড়লে:
- অ্যান্টহিস্টামিন, কর্টিকোস্টেরয়েড, বা অন্যান্য ওষুধ দিয়ে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করা হবে।
- যদি অ্যালার্জি খুব গুরুতর হয়, তাহলে চিকিৎসক ইমিউনোথেরাপির পরামর্শ দিতে পারেন।
অন্য রোগের কারণে WBC বাড়লে:
- রোগের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা করা হবে।
- যদি রোগটি ক্যান্সার হয়, তাহলে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হবে।
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার জটিলতা
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়লে কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে।
এর মধ্যে রয়েছে:
- রক্ত জমাট বাঁধা: অতিরিক্ত WBC রক্তকে ঘন করে তুলতে পারে, যা রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়।
- রক্তনালীর ক্ষতি: অতিরিক্ত WBC রক্তনালীর ক্ষতি করতে পারে।
- অঙ্গের ক্ষতি: অতিরিক্ত WBC অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে।
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার প্রতিরোধ
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়ার কোনো নির্দিষ্ট প্রতিরোধ নেই।
তবে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে WBC বাড়ার ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
- পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতি রাতে 7-8 ঘন্টা ঘুমানো।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: প্রচুর ফল, সবজি, এবং শস্য জাতীয় খাবার খাওয়া।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা: প্রতি সপ্তাহে অন্তত 150 মিনিট মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম করা।
- ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করা: ধূমপান এবং মদ্যপান WBC বাড়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়া একটি সাধারণ সমস্যা। তবে, এর কিছু জটিলতা হতে পারে। তাই, যদি আপনার WBC বাড়ে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন 1: WBC বাড়ার সাধারণ লক্ষণগুলো কি কি?
উত্তর: WBC বাড়ার সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
- জ্বর
- ক্লান্তি
- শরীর ব্যথা
- মাথাব্যথা
- রাতে ঘামতে থাকা
- ওজন কমে যাওয়া
- গলায় ব্যথা
- মুখে ঘা
- শরীরে র্যাশ বা ফুসকুড়ি হওয়া
প্রশ্ন 2: WBC বাড়ার কি কি কারণ হতে পারে?
উত্তর: WBC বাড়ার অনেক কারণ হতে পারে। এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো:
- সোঁক: শরীরে কোনো সংক্রমণ হলে, WBC বাড়তে পারে।
- অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের বিভিন্ন খাবার, ওষুধ, বা ধুলো-বালির প্রতি অ্যালার্জি থাকে। এই অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায়ও WBC বাড়তে পারে।
- অন্য রোগ: কিছু অন্য রোগ, যেমন লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, এবং মাল্টিপল মাইলোমা, WBC বাড়ার কারণ হতে পারে।
- ওষুধ: কিছু ওষুধ, যেমন কোর্টিকোস্টেরয়েড, WBC বাড়ার কারণ হতে পারে।
প্রশ্ন 3: WBC বাড়ার চিকিৎসা কি?
উত্তর: WBC বাড়ার চিকিৎসা নির্ভর করে এর কারণের উপর। যদি সংক্রমণের কারণে WBC বাড়ে, তাহলে চিকিৎসক সংক্রমণের চিকিৎসা করবেন। যদি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায় WBC বাড়ে, তাহলে চিকিৎসক অ্যালার্জি প্রতিরোধ করার ওষুধ দেবেন। যদি অন্য কোনো রোগের কারণে WBC বাড়ে, তাহলে সেই রোগের চিকিৎসা করা হবে।
প্রশ্ন 4: WBC বাড়ার কি কি জটিলতা হতে পারে?
উত্তর: WBC বাড়ার কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
- রক্ত জমাট বাঁধা: অতিরিক্ত WBC রক্তকে ঘন করে তুলতে পারে, যা রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়।
- রক্তনালীর ক্ষতি: অতিরিক্ত WBC রক্তনালীর ক্ষতি করতে পারে।
- অঙ্গের ক্ষতি: অতিরিক্ত WBC অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে।
প্রশ্ন 5: WBC বাড়ার প্রতিরোধ কিভাবে করা যায়?
উত্তর: WBC বাড়ার কোনো নির্দিষ্ট প্রতিরোধ নেই। তবে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে WBC বাড়ার ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
- পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতি রাতে 7-8 ঘন্টা ঘুমানো।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: প্রচুর ফল, সবজি, এবং শস্য জাতীয় খাবার খাওয়া।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা: প্রতি সপ্তাহে অন্তত 150 মিনিট মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম করা।
- ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করা: ধূমপান এবং মদ্যপান WBC বাড়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রশ্ন 6: WBC বাড়ার জন্য কোন কোন পরীক্ষা করা হয়?
উত্তর: WBC বাড়ার জন্য সাধারণত রক্ত পরীক্ষা করা হয়। রক্ত পরীক্ষায় WBC এর সংখ্যা পরিমাপ করা হয়। WBC এর সংখ্যা যদি 11,000 এর বেশি হয়, তাহলে তাকে WBC বাড়া বলা হয়।
প্রশ্ন 7: WBC বাড়ার জন্য কোন কোন ওষুধ দেওয়া হয়?
উত্তর: WBC বাড়ার কারণের উপর নির্ভর করে ওষুধ দেওয়া হয়। যদি সংক্রমণের কারণে WBC বাড়ে, তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল, বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ দেওয়া হয়। যদি অ্যালার্জির কারণে WBC বাড়ে, তাহলে অ্যান্টহিস্টামিন, কর্টিকোস্টেরয়েড, বা অন্যান্য ওষুধ দেওয়া হয়। যদি অন্য কোনো রোগের কারণে WBC বাড়ে, তাহলে সেই রোগের চিকিৎসার জন্য ওষুধ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন 8: WBC বাড়ার জন্য কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত?
উত্তর: WBC বাড়ার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। এর মধ্যে রয়েছে:
- প্রচুর ফল, সবজি, এবং শস্য জাতীয় খাবার।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
- স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার।
প্রশ্ন 9: WBC বাড়ার জন্য কোন কোন খাবার এড়ানো উচিত?
উত্তর: WBC বাড়ার জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত পানীয়, এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এড়ানো উচিত।
প্রশ্ন 10: WBC বাড়ার জন্য কোন কোন জীবনযাপনের পরিবর্তন করা উচিত?
উত্তর: WBC বাড়ার জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা উচিত। এর মধ্যে রয়েছে:
- পর্যাপ্ত ঘুম।
- নিয়মিত ব্যায়াম।
- ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ।
WBC বাড়ার জন্য কি কোনো রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকে?
হ্যাঁ, WBC বাড়ার জন্য রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত WBC রক্তকে ঘন করে তুলতে পারে, যা রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়। রক্ত জমাট বাঁধার ফলে রক্তপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
WBC বাড়ার জন্য কি কোনো ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে?
হ্যাঁ, WBC বাড়ার জন্য ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে। WBC বাড়ার একটি কারণ হলো লিউকেমিয়া, যা একটি রক্তের ক্যান্সার।
WBC বাড়ার জন্য কি কোনো স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে?
হ্যাঁ, WBC বাড়ার জন্য স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। WBC বাড়ার কারণে যদি রক্ত জমাট বাঁধে, তাহলে তা অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। WBC বাড়ার কারণে যদি লিউকেমিয়া হয়, তাহলে তা মারাত্মক হতে পারে।
উপসংহার
হোয়াইট ব্লাড সেল বাড়া একটি সাধারণ সমস্যা। তবে, এর কিছু জটিলতা হতে পারে। তাই, যদি আপনার WBC বাড়ে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।